ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় অনেকগুলো নদী আছে। সেগুলো হচ্ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, কাঁচামাটিয়া নদী, মঘা নদী এবং সোয়াইন নদী।[২][৩]
আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার অর্ন্তগত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি সমৃদ্ধ এলাকা আঠার বাড়ী। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকেই এলাকাটি ব্যবসা-ব্যাণিজ্যে ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অগ্রসর। এমন একটি সমৃদ্ধ এলাকায় জমিদার প্রমোদ চন্দ্র রায়ের পরিত্যক্ত দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল জমিদার বাড়ী এখনও ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে নিরব দাড়িয়ে আছে। চমৎকার কারুকার্যময় এ রাজবাড়ীটির বয়স প্রায় আড়াই শত বছর। ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে কিছু অগ্রসর হলেই চোখে পড়বে জমিদার বিশাল অট্টালিকা।
১৭৯৩ খ্রিষ্ঠাব্দ পর্যন্ত হোসেন শাহী পরগনা রাজশাহী কালেক্টরের অধিনে ছিল। সে সময় মহা রাজ রামকৃষ্ণের জমিদারি খাজনার দায়ে নিলামে উঠলেএ পরগনাটি খাজে আরাতুন নামে এক আর্মেনীয় ক্রয় করেন। ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে আরাতুনের ২ মেয়ে বিবি কেথারিনা, বিবি এজিনা এবং তার দুই আত্মীয় স্টিফেন্স ও কেসর্পাজ প্রত্যেক চারআনা অংশে এ পরগানার জমিদারী লাভ করেন। ১৮৫৩ খ্রিষ্টব্দে আঠার বাড়ী জমিদার সম্ভুরায় চৌধরী, বিবি এনিজার অংশ কিংবা মতান্তরে কেসপার্জের অংশ ক্রয় করেন। পরে মুক্তাগাছার জমিদার রামকিশোর চৌধরী জমিদারী ঝনের দায়ে নিলামে উঠলেতা সম্ভুরায় চৌধরীর পুএ মহিম চন্দ্র রায় চৌধরী কিনে নেন। শুধু তাই নয়, ঊঁনিশবিশ শতাব্দীক প্রথম দিকে (১৯০৪ খ্রিষ্টব্দে) মহিম চন্দ্র রায় চৌধরীর স্ত্রী জ্ঞানেদা সুন্দরীর স্বামীর উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে পরনায় ১৪ আনার মলিক হন। বাকী দুই আনা অন্য এলাকার জমিদাররা কিনে নেন।
জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর তাদের আয়ত্তে আসে উত্তর গৌরীপুরের রাজবাড়ী, পশ্চিমে রামগোপাল পুর, ঢৌহাখলা দক্ষিনে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেন পুর ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা। তাছাড়া বৃহৎত্তর ময়মনসিংহের জামালপুর জেলার কয়েকটি মৌজা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বেশ কিছু মৌজা ছিল এ জমিদারের দখলে। প্রতি বছরে নির্দিষ্ট এক সময়ে এসব জেলা শহরে স্থাপিত আঠারবাড়ী কাচারী বাড়ীতে নায়েব উপস্থিত হয়ে খাজনা আদায় করত। আজ ও এসব কাচারী আঠারবাড়ী বিল্ডিং নামে নিজ নিজ জেলা পরিচিতি পেয়েছে। জমিদার সম্ভুরায় চৌধরীর পিতা দিপ রায় চৌধরীর প্রথম নিবাস ছিল বর্তমান যশোর জেলায়।তিনি যশোর জেলার একটি পটরগনায় জমিদার ছিলেন। সুযোগ বুঝে এক সময় দ্রীপ রায় চৌধরী তার পুত্র সম্ভুরায চৌধরীকে নিয়ে যশোর থেকে আলাপ সিং পরগনায় অর্থ্যাৎ আঠারবাড়ী আসেন।
আগে এ জায়গাটার নাম ছিল শিবগঞ্জ বা গোবিন্দ বাজার। দীপ রায় চৌধরী নিজ পুত্রের নামে জমিদারি ক্রয় করে এ এলাকায় এসে দ্রুত আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হন এবং এলাকার নাম পরির্তন কওে তাদের পারিবারিক উপাধি (রা) থেকে রায় বাজার রাকেন । আর রায় বাবু একটি অংশে এক একর জমির উপর নিজে রাজবাড়ী, পুকুর ও পরিখা তৈরী করেন। রায় বাবু যশোর থেকে আসার সময় রাজ পরিবারের কাজর্কম দেখাশুনার জন্য আঠারটি হিন্দু পরিবার সংঙ্গে নিয়ে আসেন। তাদের রাজ বাড়ী তৈরী করে দেন। তখন থেকে জায়গাটি আঠারবাড়ী নামে পরিচিত লাভ করে। দীপ রয় চৌধরী মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্ভুরায় চৌধরী জমিদার লাভ করেন। তবে কোন পুত্র সন্তান না তাকায় তিনি নান্দাইল উপজেলায় খারূয়া এলাকা থেকে এক ব্রাম্মণ প্রমোদ রায় চৌধরীকে দত্তক এনে লালন পালন করে এক সময় জমিদারী কর্ণধার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS